কোথাও ভোটের আগের রাত থেকে বোমাবাজি, কোথাও বিরোধী দলের এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দেওয়া। কোথাও ভোটারদের পথ আটকে হুমকি, তো কোথাও আবার বিরোধী দলের কর্মীদের মধ্যে মারামারি। তৃতীয় দফায় বিধানসভা নির্বাচনের ছবিটা আগের দুই দফার থেকে আলাদা হলো না রাজ্যে।
মঙ্গলবার ভোট চলা কালীন, আরামবাগ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মন্ডল খাঁ আরন্ডি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের এক পাড়ায় গিয়ে ভোটারদের হুমকি দিতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। এরপর সেখানে সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায়। গ্রামবাসীরা তাকে লাঠি নিয়ে তাড়া করে।
বাসন্তী ঢুড়ি অঞ্চলে ৫৫ নম্বর বুথের আরএসপি প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট মুর্তজা মোল্লাকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এমনকি তার মোটরবাইক ভাঙচুর করে পুকুরের জলে ফেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ।
ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্রের দুর্গাপুর শকুন্তলায় আইএসএফ কর্মীদের ওপর হামলা চালায় তৃণমূলী দুষ্কৃতীরা। সেখানে ১২৭ নম্বর বুথে এজেন্টকে ঢুকতে বাধা দেয়।
অভিযোগ, হরিপাল কেন্দ্রের আশুতোষ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কৃষ্ণপুর মালপাড়া আইএসএফ প্রার্থী শিমল সরেনের এজেন্ট প্রবীর ঘোষকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা মারধর করে। প্রার্থী সেখানে নিজে উপস্থিত হলে দুষ্কৃতীরা পালায়।
পাঁটরার সিপাইগাছিতে ভোট চলাকালীন তৃণমূল-বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলতে থাকে দুপুর থেকে।
মগরাহাট পশ্চিম কেন্দ্রে নেতারা হাই মাদ্রাসার বুথে আইএসএফ প্রার্থী মইদুল ইসলামকে ঢুকতে বাধা দিলে তিনি বুথের সামনে ধর্নায় বসে যান।
উলুবেরিয়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী পাপিয়া অধিকারীকে তৃণমূল কর্মীরা পুলিশের সামনেই ঘুঁষি মারে বলে অভিযোগ।
অন্যদিকে, গোঘাটে হৃদ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত এক বৃদ্ধকে ঘিরে অপপ্রচার করে তৃণমূল।
আবার বিজেপি নেতারা গোঘাটেই এক মহিলার অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে অপপ্রচার করে বলে অভিযোগ।
এভাবেই জায়গায় জায়গায় তৃতীয় দফার ভোটকে কেন্দ্র করে দিনভর অশান্তির ছবি যেমন একদিকে উঠে এলো। অন্যদিকে আবার বিষ্ণুপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পানাকুয়া ১৩৫ নম্বর বুথের সামনে ঘটা অন্যরকম দৃশ্যের সাক্ষী থাকল রাজ্যবাসী, সংবাদ মাধ্যমের দ্বারা।
১০ বছর ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না পারা এক গৃহবধূ এদিন ভোট দিতে গেলে, তৃণমূল আশ্রিত এক দুষ্কৃতী তাকে বাধা দেয়। তিনি ওই দুষ্কৃতীকে সাফ জানান, "ভোট দেবই। যা করার করে নিস।"
এই ভিডিও কয়েক ঘন্টায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেলে, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ওই দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করতে বাধ্য হয়।
বিশাল পরিমাণে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকা সত্ত্বেও এবং নির্বাচন কমিশন বারবার আশ্বস্ত করার পরেও, ভোট গ্রহণ কি আদৌ অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে হচ্ছে? প্রশ্ন রাজ্যবাসীর।
Recent Comments: