Criminal justice season 2
পরিচালক: রোহন সিপ্পি আর অর্জুন মুখার্জি
কলমে: অপূর্ব আসরানি
কলাকুশলী: যীশু সেনগুপ্ত, পঙ্কজ ত্রিপাঠী, কীর্তি কুলহারি, মিতা বশিষ্ঠ, দীপ্তি নাভাল, অদ্রিজা সিনহা, আয়াজ খান, আশিষ বিদ্যার্থী, শিল্পা শুক্লা, অনুপ্রিয়া গোয়েঙ্কা
প্ল্যাটফর্ম : হটস্টার
একটা মেয়ের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা কী? নিজের সংসার সামলে রাখতে না পারা। এটাই আমাদের পুরুষশাসিত সমাজের 'মনু স্মৃতি' নির্দেশিত বচন । নিজের স্বামীকে খুন করার মধ্যে আমাদের ভারতবর্ষ দেখে সমাজ থেকে ছিটকে বেরোনো এক অপয়া নারীকে। স্বামী গাল দিক, মারুক, গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দিক তবুও 'সোনার আংটি' ব্যাঁকা হলেও তার বাজারদর কমে নাকি গোছের এক সমাজ দেখা যায় এই সিরিজে। আমরা ভারতীয় নারী, পতি পরম গুরু এই শেখানো হয়, আর শেখানো হয় একজন গৃহকর্ম নিপুণা নারী হয়ে উঠতে। সমাজের বেঁধে দেয়া মাপকাঠি। কীর্তি কুলহারির আবেদনে ফুটে ওঠে তার ব্যর্থতা। অধিক নারীই বুঝে উঠতে পারেন না গৃহ!হিংসা কাকে বলে। ম্যারিটাল রেপ আবার কী বস্তু? খায় না মাথায় দেয়? ভারতীয় সমাজে নারী-পুরুষ জানেই না 'consent' এর মানে। গল্পের শুরুতে দেখা যায় বিক্রম চন্দাকে, সে একজন আদর্শ স্বামী, সফল উকিল আর স্নেহময় বাবা। এরকম একজন পূর্ণ পুরুষকে মারার অর্থ নিশ্চয়ই তার কোনো চরিত্রে দাগ আছে? তার উপর প্রত্যক্ষদর্শী তার নিজের মেয়ে। এই হেরে যাওয়া কেস লড়তে বিয়ের বাসর ঘর থেকে উঠে চলে আসেন মাধব মিশ্রা ওরফে পঙ্কজ ত্রিপাঠী। একের পর এক সওয়াল জবাব, জেলের মহিলা আসামীদের জীবনের নানা সমস্যা পরতে পরতে সাজানো থাকে। এর মধ্যেই আসে ঈশানী। শুরু হয় নিখখত আর মাধবের লড়াই। টানটান কোর্ট রুম ড্রামা। এক কোণে ছেলে হারানো দীপ্তি আরেক কোণে চোখের জল জমে যাওয়া অনু। আরেক দিকে পুরুষ সমাজ কতটা সঠিক আর পাপমুক্ত তার প্রতীক হিসেবে থাকেন আশিষবাবু । অভিনয়, সামাজিক সমস্যা সব মিলিয়ে একটি জমাটি সিরিজ। আসলে ধর্ষক স্বামীও যে একদম ভদ্রলোকের মতো, আমাদের পাশের বাড়ির হাসিখুশি মানুষ তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এই সিরিজ গার্হস্থ্য হিংসার কথাও যেমন দেখিয়েছে, তেমন দেখিয়েছে এক নতুন সংসারের কাহিনিও। সব মিলিয়ে চোখ খুলে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। হয়তো এমন একদিন দিন বদলের ডাক আসবে যেদিন ভারতীয় সমাজ 'consent' শব্দটাকে বুঝতে শিখবে।
Recent Comments: